Saturday 22 June 2013

মস্তিষ্কের সব তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে?

মানুষের মস্তিষ্কের যাবতীয় তথ্য আগামী ৩২ বছরের মধ্যেই কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গত শনি ও রোববার অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল ফিউচারস ২০৪৫ ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস’ শীর্ষক সম্মেলনে তাত্ত্বিক ও কল্পবিজ্ঞানের সমন্বয়ে উপস্থাপিত বিভিন্ন সম্ভাবনার মধ্যে এই তথ্য সংরক্ষণের প্রসঙ্গটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।
গবেষক রে কার্জউইল, পিটার ডিয়াম্যান্ডিস ও মারভিন মিন্সকি মানবমস্তিষ্ক এবং কম্পিউটার প্রযুক্তির সমন্বয়ের সম্ভাবনা নিয়ে সম্মেলনে বক্তব্য দেন। তাঁরা প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন ও সম্ভাব্য নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে ২০৪৫ সাল নাগাদ মস্তিষ্কের সব তথ্যই সংরক্ষণের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গুগলের প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক রে কার্জউইল বলেন, আগামী ৩২ বছরে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সমৃদ্ধির ফলে মানুষ অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য (সিঙ্গুলারিটি) অর্জনে সমর্থ হবে। আর এতে মানুষ নিজেকেও ছাড়িয়ে যাবে। তিনি কম্পিউটারের ক্ষমতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত মুরের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, প্রতি দুই বছর অন্তর কম্পিউটারের ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। জিনগত পরম্পরা বা জেনেটিক সিকোয়েন্সিং থেকে শুরু করে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির মতো পরিবর্তন এই সূত্রকেই প্রতিষ্ঠিত করে। মানুষের মস্তিষ্কের কাজ চালাতে প্রয়োজনীয় কম্পিউটার ও অন্যান্য প্রযুক্তি ২০৪৫ সালের মধ্যে অর্জন করা সম্ভব হবে।
জৈবপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড থেরাপোটিকস করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মার্টিন রথব্ল্যাট ‘মাইন্ডক্লোন’ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। এ প্রযুক্তি অনুযায়ী মস্তিষ্কের সব তথ্যের প্রতিরূপ তৈরি করে কম্পিউটারে রাখা হবে। আর সেই তথ্য চালিত হবে ‘মাইন্ডওয়েভ’ নামের একটি সফটওয়্যারে। এটি আত্মরক্ষার পাশাপাশি নিজের প্রতিরূপ তৈরি করতে পারবে।
সামাজিক যোগাযোগের অনলাইনভিত্তিক মাধ্যমগুলোতে প্রায় একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহূত হয় বলে অনেকে দাবি করেন। তবে ‘মাইন্ডওয়েভ’-এর অনন্য বৈশিষ্ট্যের পক্ষেও মত দেন অনেকে। এদিকে রথব্ল্যাটের পরিকল্পনাটি মানবাধিকারের পরিপন্থী হয়ে দেখা দিতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
মস্তিষ্কের সরাসরি নির্দেশে যন্ত্র চালনার পদ্ধতি ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) নিয়ে বর্তমানে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ রজার পেনরোজ মনে করেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সামর্থ্য মানবমস্তিষ্কের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। তবে এটি ২০৪৫ সালের মধ্যেই সম্ভব হবে বলে নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। লাইভসায়েন্স।

No comments:

Post a Comment